WelCome to AbirTunes

দঃ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথমবারের মত সিরিজ জয় বাংলাদেশের , আরও একটি ইতিহাস।

Wednesday, July 15, 2015 0 comments

হাফ সেঞ্চুরির পর সৌম্য। সেঞ্চুরিটা হয়নি। কিন্তু তাঁর ৭৫ বলে ৯০ রানের ইনিংসটা অনায়াসে ম্যাচ জিতিয়েছে বাংলাদেশকে। জিতিয়েছে সিরিজ। কাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে l ছবি: শামসুল হকআরও একটি ইতিহাস। অর্জনের মুকুটে আরও একটি সোনালি পালক। আবারও প্রাণের উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়া। ১৬ কোটি মুখে আনন্দের ঝিলিক। উপলক্ষ সেই ক্রিকেট।
পাকিস্তান, ভারত, এরপর কি দক্ষিণ আফ্রিকা? চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কাল রাতের আলোকচ্ছটায় মিলে গেছে এই প্রশ্নের উত্তর। হ্যাঁ, দুর্বার এই বাংলাদেশের কাছে এবার হারল দক্ষিণ আফ্রিকাও। ঘরের মাঠে আরও একবার বাঘের হুংকার ছড়িয়ে এবার ওয়ানডের চতুর্থ সেরা দলের বিপক্ষেও প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ নিল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। তিন ওয়ানডে সিরিজের ফলাফল—বাংলাদেশ ২: দক্ষিণ আফ্রিকা ১।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বৃষ্টির শঙ্কা নিয়েই শুরু হয়েছিল সিরিজের শেষ ওয়ানডে। তবে শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি নয়, জয়ী বাংলাদেশ দলের জয়ের অদম্য আকাঙ্ক্ষা। বৃষ্টির উপদ্রবে খেলা মাঝপথে প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকলেও তার মধ্যেই সৌম্য-মুস্তাফিজদের উত্তুঙ্গ আত্মবিশ্বাসটা প্রকাশিত। উঁচু তলার দলগুলোকে আরও একবার জানান দেওয়া গেল বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান ক্রিকেটীয় সামর্থ্য।
২৩ ওভার শেষে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার সময়ই দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের কোমর প্রায় ভাঙা। ৭৮ রানে ৪ উইকেট নেই। ২ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট পর খেলা আবার শুরু হলেও প্রোটিয়াদের শুরুটা আর নতুন করে হয়নি। ৪০ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৮-ই করতে পারল দলটা। তামিম ইকবাল-সৌম্য সরকারের উদ্বোধনী জুটিতেই প্রায় সেটা টপকে গেছে বাংলাদেশ দল। জয় থেকে মাত্র ১৬ রান আগে নার্ভাস নাইনটিতে সৌম্য সরকার আউট হয়ে যাওয়ায় অল্পের জন্য হাতছাড়া হয়ে গেছে ওয়ানডেতে প্রথম ১০ উইকেটের জয়। তবে ৯ উইকেটের জয়টাও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে দৃশ্যমান দূরত্ব রেখেই তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচের যে তখনো ৮৩ বল বাকি!
সৌম্য যেন প্রতি ম্যাচেই নিজেকে একটু একটু করে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। ঢাকায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮৮ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ জেতালেন। পাকিস্তান সিরিজের পর কাল তো পেয়ে যাচ্ছিলেন ওয়ানডেতে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিই। কিন্তু দুর্ভাগ্য, সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১০ রান দূরে থাকতে ইমরান তাহিরের বলে কাভারে হাশিম আমলার হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দিলেন সৌম্য। বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের রাতে অতৃপ্তি বলতে তাঁর সেঞ্চুরি না পাওয়াটাই। নইলে শুরু থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের যে রকম শাসনে রেখেছিলেন, ইতিহাসের অংশ হয়ে যাওয়া ম্যাচে সেঞ্চুরির স্মারক তাঁর প্রাপ্যই ছিল। ৭৫ বলে ৯০ রানের ইনিংস, ১৩টি বাউন্ডারির সঙ্গে অলংকার মরনে মরকেলকে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে মারা একটি ছক্কাও। এর আগে কাগিসো রাবাদাকে চার মেরেছেন টানা তিন বলে।
সৌম্য যতক্ষণ ছিলেন, একটু যেন আড়ালেই পড়ে ছিলেন তামিম। তবে কালকের ম্যাচটা তাঁর জন্যও বিশেষ কিছু। গত মাসে ভারত সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ফিফটির পর থেকে নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন এই বাঁহাতি ওপেনার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে ০ আর ৫, তার আগে দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে করেছেন ৫ ও ১৩। কাল রাতে ৭৭ বলে করা ৬১ রানের ইনিংসটা তাই চট্টগ্রামের ঘরের ছেলের জন্য প্রত্যাবর্তনের ঘোষণাই।
সৌম্য-তামিমের আগে অবশ্য বাংলাদেশের বোলাররাই কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন প্রোটিয়াদের ভিত। ভারত সিরিজে অভিষেক ওয়ানডে থেকেই মুস্তাফিজুর রহমান এক বিস্ময়ের নাম। ঢাকার দ্বিতীয় ওয়ানডের পর দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরাও কাল আরেকবার টের পেলেন তাঁর অফ কাটার কতটা বিষাক্ত। ২৯ রানে ২ উইকেট নিয়ে রুবেল হোসেনও আরও একবার ধারাবাহিক। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতে উইকেট-শূন্য থাকা সাকিব আল হাসানও এদিন স্বরূপে। ৩৩ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন, এর মধ্যে হাশিম আমলাকে কট বিহাইন্ড করে ঢুকে গেছেন রেকর্ড বইয়েও। ইতিহাসের সপ্তম বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে চার হাজার রান ও দুই শ উইকেটের মালিক এখন সাকিব। আবদুর রাজ্জাকের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে নিলেন দুই শ উইকেট। ওয়ানডেতে দুই শ উইকেটের অপেক্ষায় ছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও। ডেভিড মিলারকে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সাব্বির রহমানের দুর্দান্ত ক্যাচ বানিয়ে তিনিও কাল ছুঁয়ে ফেলেছেন সে মাইলফলক।
বাংলাদেশের বোলারদের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানদের অবস্থা কতটা করুণ ছিল, তা স্কোরকার্ডই বলে দেয়। বড় জুটি বলতে ৫০ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর পঞ্চম উইকেটে মিলার-ডুমিনির ৬৩। তবে বোবা স্কোরকার্ড বাংলাদেশ দলের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের কথাটা বলতে পারছে না। মিলারের ক্যাচটি ছাড়া লং অন বাউন্ডারিতে আরও একটি অসাধারণ ক্যাচ নিয়েছেন সাব্বির। সাকিবের বলে ফারহান বেহারডিয়ান বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়েছিলেন। বাধা হয়ে দাঁড়ালেন সাব্বির। বাউন্ডারিতে ক্যাচটি নিয়েও অবশ্য ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে বলটা শূন্যে ছুড়ে দিয়ে দ্বিতীয় চেষ্টায় সেটা তালুবন্দী করলেন মাঠের ভেতর নিরাপদ জায়গায় এসে। টুকটাক ক্যাচ মিসও ছিল অবশ্য। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৬৮ রানে আটকে রাখার কৃতিত্বের পর সেগুলো আর কারও মাথায়ই থাকল না।
ম্যাচ শেষে তো আরও নেই। বিজয়ের রাতে বিষাদের কথা কে বা মনে রাখতে চায়!
পাকিস্তান–ভারতের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও সিরিজ জয়
দ. আফ্রিকা: ৪০ ওভারে ১৬৮/৯
বাংলাদেশ: ২৬.১ ওভারে ১৭০/১
ফল: বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী (ডি/এল)
Share this article :

Post a Comment

Thank you


#htmlcaption1 Go UP! Saadika Abir Telecom. The Group of Power Voice. #htmlcaption2 Stay Connected
 
Support : Abir's Tune | AR.Mukul Temples | SaabTelecom | Face Book | The Power of IT World
Copyright © 2015. AbirTunes - All Rights Reserved
Template Created by Abir's Tune Modify by Sadika Abir Telecom
Proudly powered by AR.Mukul